• Uncategorized

    বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে নিরাপদ পানি নিশ্চিত করনের দাবিতে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

      প্রতিনিধি ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৩:৫৪:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ

    হারুন শেখ বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি।

    উপকূলীয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের ৪ লাখ মানুষের সুপেয় খাবার পানি নিশ্চিত করনে কর্মশালায় দাবি তুলেছেন স্থানীয় ভূক্তভোগীরা। সরকারিভাবে খাস পুকুর সংস্কার, পিএসএফ নির্মাণ করে এখনই পদক্ষেপ গ্রহনের জোর দাবি জানান সরকারের দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি।

    শনিবার বেলা ১১টায় তুবা কমিউনিটি সেন্টারে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডরপ এ্যাকসেস প্রকল্পের আয়োজনে খাস পুকুর ও পিএসএফ-এ প্রবেশাধিকার বিষয়ে সিএসও/সিবিও প্রতিনিধিদের এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কর্মশালায় মা, সংসদ, স্বাস্থ্য গ্রাম দল ও বাজেট মনিটরিং ক্লাব ও যুব গ্রুপের ৩০ জন স্থানীয় প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহন করেন।

    সরকারিভাবে এ অঞ্চলে খাবার পানি উপযোগী খাস পুকুরগুলো সংস্কার, পিএসএফ নির্মাণের দাবি তুলে কর্মশালায় বক্তৃতা করেন ডরপ এর মা সংসদের স্পিকার সুফিয়া খাতুন, যুব গ্রুপের নেত্রী শেফালী আক্তার রাখি, বাজেট মনিটরিং ক্লাবের সদস্য মো. শাহজাহান, শৈবা রানি ডাকুয়াসহ একাধিকরা।

    এদিকে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, সুন্দরনের কোল ঘেষা পানগুছি নদীর তীরবর্তী উপকূলীয় এ উপজেলাটি ১৬ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হলেও ভৌগলিক অবস্থানে ৪৩৮ বর্গকিলোমিটার (১৬৯ বর্গমাইল) আয়তন জুড়ে বিস্তৃত। এখানে প্রায় ৪ লাখ মানুষের বসবাস। অতিরিক্ত লবণাক্ততা ও সুপেয় পানির অভাবে এ জনপদের মানুষের জীবনযাত্রা দিন দিন ব্যাহত হচ্ছে। কৃষি নির্ভরশীল ফসলী জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদনে বাধাগ্রস্ত। ৮০’র দশকে খাবার পানি সংগ্রহে গ্রামীণ জনপদের মানুষের পুকুরের পাশাপাশি টিউবয়েল ব্যবহারে খাবার পানির চাহিদা মিটানো হতো। পরবর্তীতে টিউবয়েলগুলোতে আর্সেনিক, আয়রন ও অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার টিউবয়েল। খাবার পানি উপযোগী ছোট বড় ২১ শ” পুকুর থাকলেও সরকারি খাস পুকুর রয়েছে শতাধিক। তাও সংস্কার ও পিএসএফ নির্মাণ না হওয়ায় ব্যবহারে অনুপযোগী। মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে ও নৌকায় করে পানি সংগ্রহ করছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। পিএসএফ না থাকার কারণে সরাসরি পুকুর ও খাল থেকে পানি নিয়ে ফুটিয়ে পান করছেন স্থানীয় গ্রামবাসিরা।

    বহরবুনিয়া গ্রামের মো. রাকিব হাসান, ঘষিয়াখালী মোস্তফা কামাল, খাউলিয়ার গফফার হাওলাদার, বারইখালী সোহেল শেখসহ একাধিক ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা বলেন, সরকারিভাবে পুকুরগুলো সংস্কার করে পর্যাপ্ত পিএসএফ নির্মাণ করা হলে। গ্রামবাসীদের সুপেয় পানির আর অভাব হবে না। সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের প্রতি জোর দাবি,খাবার পানি উপযোগী ব্যক্তিমালিকানা পুকুর ও খাস পুকুরগুলো সংস্কার করার।

    ডরপ এ্যাকসেস প্রকল্পের মোরেলগঞ্জ উপজেলা কো-অর্ডিনেটর মো. সওকত চৌধুরী বলেন, উপকূলীয় এ উপজেলার গ্রামীন জনপদের মানুষের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন ও সুপেয় পানির সংকট দূরীকরনের জন্য ইতোমধ্যে ডরপ এ্যাকসেস প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৩ সাল থেকে তারা ৬ টি ইউনিয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। যদিও এ অঞ্চলে চাহিদা অনুযায়ী অপ্রতুল। সরকারিভাবে খাস পুকুরসহ খাবার পানি উপযোগী পুকুরগুলো সংস্কারসহ পর্যাপ্ত পিএসএফ নির্মাণের জন্য এখন থেকেই উদ্যোগ গ্রহন করা প্রয়োজন। তা হলে উপকূলীয় বাসির সুপেয় পানির সংকট দূর হবে বলে তিনি মনে করেন।

    এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় খাবার পানি উপযোগী শতাধিক খাস পুকুর রয়েছে। ইতোমধ্যে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে জেলা পরিষদ থেকে ৫০ টি পুকুর সংস্কার ও ৩০ টি সৌর চালিত পিএসএফ নির্মাণ করা হয়েছে। নতুন করে শতাধিক পিএসএফ নির্মাণের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। তবে, খাবার পানি সংকট লাঘবের জন্য বিকল্প ব্যবস্থায় বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার পানির ট্যাংকি বিতরণ করা হয়েছে।



    আরও খবর

    Sponsered content