• Uncategorized

    ফেসবুকে মিথ্যা প্রচারণা ও বিভ্রান্তি: ‘সৈরাচারমুক্ত সুবিধাবাদ বিরোধী এক্সপ্রেস’-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা জরুরি

      প্রতিনিধি ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৬:৪৫:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

    বিশেষ প্রতিনিধি ; জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পরে দেশের মধ্যে একটি চক্র বিগত সরকারের চক্রান্তগুলো বাস্তবায়নে কাজ করে চলেছে। তারা নানাভাবে কাজ করছে। কি করে সরকারের দুর্নাম হয়। কি করে দেশের সর্ব বৃহত্তম দল বিএনপি’র দুর্নাম হয় সে বিষয়ে উঠে পড়ে লেগেছে। যে কারণে তারা বেছে নিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি। এই চক্রটি একদিকে ভারতে বসে তথ্য সন্ত্রাস করছে অপার দিকে দেশের মধ্যেও তারা রাম রাজত্ব কায়েম করছে।
    দেশের অনলাইন পরিসর এখন শুধু তথ্যের উৎস নয়—এটি বিভ্রান্তি, অপপ্রচার ও পরিকল্পিত হয়রানির নতুন অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে “সৈরাচারমুক্ত সুবিধাবাদ বিরোধী এক্সপ্রেস” নামের একটি ফেসবুক পেজ সাম্প্রতিক সময়ে জনমনে উদ্দীপনার আড়ালে ভয়াবহ বিভ্রান্তি তৈরি করছে। এই পেজটি পুরনো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ছবি, অতীত সরকারের অনুষ্ঠান কিংবা বিভিন্ন নেতার ব্যক্তিগত ছবি জোড়া লাগিয়ে এমনভাবে উপস্থাপন করছে, যাতে সাধারণ মানুষ ভুল বোঝে এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঘৃণা বা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেকে সামাজিক মর্যাদা, পেশাগত পরিচয় ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় পড়ছেন এসব মিথ্যা প্রচারের কারণে। যে কারণে দেশের মধ্যে হানাহানি মারামারি বৃদ্ধি পায়। এবং আওয়ামীলীগ ও দোসররা যাতে সুবিধা ভোগ করতে পারে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ফেসবুক পেজটি কখনো বিএনপির কখনো বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজন্তা ছবি ব্যবহার করছে। একে একে জনগণের মনে চরম খুব সৃষ্টি হচ্ছে। একজন ভুক্তভোগী জানায় আমি দীর্ঘদিন যাবৎ ছাত্রদল করেছি, কৃষক দলের একটি জেলার সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলাম ২০২২ সাল পর্যন্ত। এছাড়াও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের সাথে সবসময় বিভিন্ন মিছিল মিটিং এ অংশগ্রহণ করেছি। তবুও ওই ভুয়া ফেসবুকে আমার একটি অনুষ্ঠানের ছবি দিয়ে সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। এছাড়া একাধিক সাংবাদিক ব্যক্তি এ বিষয়ে অভিযোগ করে বলেন প্রতিনিয়ত আমাদের সম্মান খুন্ন করা হচ্ছে আমরা এর শাস্তি দাবি করছি। আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি,বিভ্রান্তির কারিগরি কৌশলে তারা এআই ব্যবহার করছে। অতীত সরকারের মন্ত্রী-নেতাদের ছবি নতুন ঘটনার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া । বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের ছবি মিক্স করে বিকৃত বার্তা ছড়ানো। কোন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ছবির সাথে ছবি যুক্ত করে কুরুচিপূর্ণ ক্যাপশন লেখা।ভুয়া ক্যাপশন, মন্তব্য ও হ্যাশট্যাগ দিয়ে মব-সৃষ্টির পরিবেশ তৈরি। এক্ষেত্রে সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। এই অপপ্রচার কেবল অনলাইন ক্ষতি নয়—এটি মাঠপর্যায়ে সামাজিক উত্তেজনা, মানহানি এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তাহীনতার বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক কে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে চাঁদা দাবি করছে এমন অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোন প্রমাণ না পাওয়ায় সাংবাদিকরাও বিভ্রান্তের মধ্যে পড়েছে। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দরা বলেছেন, ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে ভুয়া facebook আইডির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
    জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি :
    এমন বিভ্রান্তিমূলক কন্টেন্টের কারণে—
    নির্দোষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে হঠাৎ বিদ্বেষ তৈরি হয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষতা উসকে দেওয়া হয়। সাংবাদিক ও পেশাজীবীরা হয়রানির শিকার হন।
    আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভুল তথ্যের জালে পড়ে বিভ্রান্ত হয়। জনমনে ভীতি, আতঙ্ক ও ভুল ধারণা ছড়িয়ে পড়ে। এ থেকে ভুক্তভোগী ক্ষতির স্বীকার হচ্ছে । যে কারণে সরকারের আপত্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। প্রতিনিয়ত হয়রানি মারামারি বেড়েই চলেছে। সামাজিক গবেষক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের কর্মকাণ্ড “ডিজিটাল মব-সন্ত্রাস” এরই রূপ, যা সময়মতো নিয়ন্ত্রণ না করলে বাস্তবে সহিংসতায় রূপ নিতে পারে।
    করণীয় ও প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ :

    ১. প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা

    সাইবার ক্রাইম ইউনিটে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের।স্ক্রিনশট, লিংক ও পোস্টের তারিখসহ প্রমাণ সংরক্ষণ। পেজ অপারেটর শনাক্তকরণ ও মামলার আওতায় আনা।

    ২. সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে রিপোর্টিং বিভ্রান্তিমূলক পোস্টগুলো ‘Harassment’ ও ‘False Information’ হিসেবে রিপোর্ট করা

    সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বিত অনলাইন প্রতিবাদ ও প্রতিবেদন

    ৩. সাংবাদিকসংগঠন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা হতে হবে ভুল তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করা।পেশাজীবীদের হয়রানির বিরুদ্ধে সংগঠিত অবস্থান। অপপ্রচারকারীদের পরিচয় উন্মোচন ও সামাজিক নিন্দা জোরদার করতে হবে।

    ৪. এসব বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে।

    “শেয়ার করার আগে নিশ্চিত হোন” প্রচার স্কুল, কমিউনিটি এবং অনলাইন গ্রুপে সোশ্যাল মিডিয়া লিটারেসি গুজব-প্রতিরোধী উদ্যোগ ও স্বেচ্ছাসেবী তথ্যযোদ্ধা টিম গঠন করার প্রয়োজন। আমার মতে,মত প্রকাশের স্বাধীনতা কখনোই মিথ্যা প্রচার, মানহানি বা জনমানুষকে বিভ্রান্ত করার লাইসেন্স হতে পারে না। “সৈরাচারমুক্ত সুবিধাবাদ বিরোধী এক্সপ্রেস” নামের পেজ যেভাবে পুরনো ছবি ও বিকৃত বার্তা ব্যবহার করে মানুষের সুনাম ধ্বংসের পথ বেছে নিয়েছে—তা আইনের চোখে দণ্ডনীয় অপরাধ এবং সামাজিকভাবে ঘৃণ্য কাজ।
    এখন প্রশাসনের দায়িত্ব কঠোর হওয়া, এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তা না হলে এই দায় প্রশাসনকে দিতে হবে। সামাজিক সচেতনতার জায়গা আরো জোরদার হওয়া প্রয়োজন রয়েছে। আর গণমাধ্যমের ভূমিকা হতে হবে দৃঢ় ও তথ্যভিত্তিক। নইলে এই ধরনের ডিজিটাল সন্ত্রাস একসময় বাস্তব জীবনের সহিংসতার আগুন জ্বেলে দেবে।



    আরও খবর

    Sponsered content