• Uncategorized

    রাজনৈতিক অস্থিরতায় দেশ: জনসাধারণ বিপাকে।

      প্রতিনিধি ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৯:৩২:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

    আওরঙ্গজেব কামাল : বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। চলতি সেপ্টেম্বরসহ গত তিন মাসে সংঘাত, সহিংসতা ও পারস্পরিক বিরোধ জাতিকে অনিশ্চয়তার এক অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর আক্রমণ-প্রতিআক্রমণ শুধু রাজনীতিকেই নয়, সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকাকেও বিপদের মুখে ফেলছে। একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অন্যদিকে রাজনৈতিক সহিংসতা—সব মিলিয়ে জনসাধারণ রয়েছে চরম বিপাকে। গ্রামীণ চায়ের দোকান থেকে শহরের অলিগলি পর্যন্ত এখন একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে: “আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে তো?” তবে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার জানানো হচ্ছে, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রস্তুতিও চলছে জোরেশোরে।জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতায় বহু প্রাণহানি ঘটেছে। কেবল জুলাই মাসেই সংঘর্ষে অন্তত ৯ জন নিহত এবং পাঁচ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
    গোপালগঞ্জ, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লায় স্থানীয় প্রভাব বিস্তার ও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে।এসব ঘটনা প্রমাণ করছে, ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সাধারণ মানুষের জীবন কোনো গুরুত্ব পাচ্ছে না। সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, হুমায়ুন কবির, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এবং এনসিপির আখতার হোসাইন । প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনুছের সফরসঙ্গী হন। সেখানে তাদের বিরুদ্ধে ডিম ছোড়া ও লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে।এই ঘটনাগুলো শুধু দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সংকটই নয়, বরং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিরোধী রাজনীতির গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিএনপি, জামাত ও এনসিপি—তিনটি প্রধান বিরোধী শক্তি হলেও তাদের মধ্যে গভীর মতপার্থক্য রয়েছে।
    জামাত ও এনসিপি বারবার বিএনপির কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বিরোধী শক্তির এই বিভক্তি আন্দোলনকে দুর্বল করছে এবং জনসাধারণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে। সাম্প্রতিক জরিপে উঠে এসেছে— ভোটাররা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চান। তবে একই সঙ্গে তারা সহিংসতার ভয়ে আতঙ্কিত।
    জনগণের এই দ্বিধা আসন্ন নির্বাচনের বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি করছে। বাংলাদেশের রাজনীতি আজ এক অনিশ্চিত সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। সহিংসতা, বিদেশে বিরোধী নেতাদের লাঞ্ছনা, বিরোধী অঙ্গনের বিভক্তি—সব মিলিয়ে জাতি এক গভীর সংকটে নিমজ্জিত। রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়, তবে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনী প্রক্রিয়া দেশের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতার জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

    আওরঙ্গজেব কামাল
    সভাপতি
    ঢাকা প্রেসক্লাব



    আরও খবর

    Sponsered content